অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে জাতীয় অধ্যাপক করার দাবি

‘সাংস্কৃতিক অভিযাত্রা ও আমাদের আত্মপরিচয়’ শীর্ষক সেমিনার

0
27

সারেঙ ডেস্ক

দেশে বর্তমানে জাতীয় অধ্যাপকের চারটি পদ শূণ্য রয়েছে। ওই পদ পূরণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। বিশেষ করে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে জাতীয় অধ্যাপক করার দাবি জানিয়েছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সাহিত্য পত্রিকা সারেঙ ও পুথিপ্রকাশের আয়োজনে ‘সাংস্কৃতিক অভিযাত্রা ও আমাদের আত্মপরিচয়’ শীর্ষক সেমিনারে সর্বসম্মতভাবে এ প্রস্তাব উত্থাপিত হয়।

ড. মাহবুব হাসানের সভাপতিত্বে ও সারেঙ সম্পাদক আবদুর রহমান মল্লিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, কবি শাহীন রেজা ও কবি জাকির আবু জাফর।  প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক  ড. আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে জাহানারা হকের কাব্যগ্রন্থ ‘মায়াবী উপত্যকা’ ও সারেঙ এর জুলাই বিপ্লব সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কথা সাহিত্যিক জয়শ্রী দাস, প্রিন্সিপাল সাব্বির উদ্দিন আহমেদ, আহমেদ মতিউর রহমান, কবি শাহ সিদ্দিক, সৈয়দ নাজমুল আহসান, এ জেড মল্লিক, আলেয়া বেগম আলো, আলমগীর গোলাপ, পুথিপ্রকাষের সুজন বিশ্বাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শাহনাজ পলি, সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম, নাসরীন গীতি, জাফরুল আলম ও রোকনুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ঈশ্বরের বিরোধীতার কোনো প্রয়োজন নেই। মানুষ বিপদে নিপতিত হলে ঈশ্বরের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে। একই শাসনের অধীনে আমরা হিন্দু-মুসলিম সুন্দর সহাবস্থান করতে পারি। পৃথিবীকে আমরা সুন্দর করতে পারি শুভবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে। পৃথিবীতে সংস্কতির ধারণা অনেক পরে এসেছে। নাচ গান প্রভৃতি বিনোদনকে সংস্কৃতি বিবেচনা করে সংস্কৃতির ধারণাকে সংকুচিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করে ধর্মকে আরো জাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, জুলাই বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন আহত হয়েছেন তারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। আমরা এখন আমাদের সংস্কৃতির দিকে ফিরে যেতে পারছি। নারিকেলের মতো আমাদের অবস্থা করে দিয়েছিল। জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রতিষ্ঠান একটি পরিবারের সদস্যদের নামে। এতো অরাজকতার মধ্যে সংস্কৃতি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। আমরা একটি বৈষম্যমুক্ত সমাজ চাই যেখানে ধর্মীয় বৈষম্য ও লিঙ্গ বৈষম্য থাকবে না।

রেজাবুদ্দৌলা চোধুরী বলেন, সাত নভেম্বরের চেতনায় জুলাই বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। বিগত দিনে চেতনার কথা বলে আমাদের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধ করে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে।

কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, সংস্কৃতিকে যুদ্ধ করে রক্ষা করতে হয়। আমরা আমাদের ঐতিহ্যবান ব্যক্তিদের ছোট করে দেখি। আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। আমরা আজকের সেমিনার থেকে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হককে জাতীয় অধ্যাপক করার জোর সুপারিশ করছি।
কবি শাহীন রেজা বলেন, আমাদের সংস্কৃতির মূল চেতনা আমাদের জাতীয়তাবাদ। আমরা প্রথমত মুসলমান তারপর বাঙালি। মুসলিম চেতনা বাদ দিয়ে যে চেতনা তৈরীর অপচেষ্টা চলছে তা রুখে দিতে হবে। আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হবে।

কবি জাকির আবু জাফর বলেন, সংস্কৃতি তথাকথিত বয়ান সংস্কৃতি চর্চায় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। আমাদের মাটি ও মানুষের বিশ্বাস ও জীবন ধারার সাথে সম্পৃক্ত সংস্কৃতির নতুন বয়ান সৃষ্টি করতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here