সফিকুল হাসান সোহেল
অফিস শেষে দৌড়ে চলে এলাম কমিউনিটি সেন্টারে। উপজেলা পর্যায়ে সেন্টারগুলোতে বিয়ের অনুষ্ঠান হলে যা হয় আর কি। ব্যাপক ভীড় চারপাশ। বিয়ে খাওয়া আমার আবার ব্যাপক আগ্রহ। বিয়ে খাওয়ার মাঝখানে খবর এসেছে বর নাকি পালিয়ে গেছে। ভিমরি খাবার যোগাড়। এমন ঘটনাও ঘটে। বিয়ের আসর থেকে কন্যা পালিয়ে যাবার ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। এই ব্যাটা,,,যাক,।
এইদিকে আমার প্লেটে মাংস কম পরেছে,চারিদিকে চেয়েও মাংস দেয়ার মতো কাউকে পেলাম না। অবশেষে অনেক উঁকিঝুঁকির পর দেখি কন্যাকে ঘিরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে,,, প্লেট হাতে নিয়ে বাবুর্চি টাইপের একজনকে বললাম, ভাইসাব গরুর মাংসের বড় ডেকটা কোথায়? সে আমার দিকে কিছুটা আশ্চর্য আবার রাগত দৃষ্টিতে তাকিয়ে ককর্শ স্বরে বলে উঠল, ছেলে উধাও হয়ে গেছে আর আপনি এখনও খাবারের পিছনে পরে আছেন। বুঝলাম না ছেলে গেছেতো কি হইছে, আমারে দাওয়াত দেওয়া হইছে,আমি খেতে এসেছি। এইদিকে কন্যা চিৎকার করে বলছে, আমি বিয়ে না করে উঠইবোনা, আমাকে এক্ষুনি বিয়ে দিতে হবে।
এদিকে আমিও প্লেট হাতে নিয়ে বললাম,হক কথা, বার বার কন্যা সাজা কি মুখের কথা,ভালো লক্ষণও নয়। আজই বিয়ে হওয়া উচিত। দেখলাম ঘিরে থাকা কয়েকজন সহমত জানিয়ে মাথা নাড়া দিলো। এবার কন্যা আবার বলে উঠলো, এই মুহূর্তে বিয়ে না হলে আমি গলায় দড়ি দিবো। আমি মুরগির রানে কামড় দিয়ে বললাম দেয়াই উচিত,এভাবে অপমান মেনে নেয়া যায় না। এবারও কজন লোক মাথা নেড়ে বলল ঠিক ঠিক। কন্যা এবার কাঁদো কাঁদো গলায় বলল,আব্বু আমি কিন্তু এককথা দুবার বলবো না। তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করেন। তা নাহলে অঘটন ঘটে যাবে। মাংস শেষে হাড্ডিতে জোরসে কামড় দিয়ে বললাম, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভাঙচুর হবে।
এবার সবাই মিলে আমার দিকে ঘুরে তাকালো, কন্যার বাপ ঝট করে আমার হাত ধরে বললো,করো কি? আমি বললাম এখন কিছুই করিনা,মাংসের ডেকটা কোথায় বলতে পারেন? সে টাইট করে হাত চেপে বললো, টাকা তিন লাখ দিবো ব্যবসা করবা আর এক্ষুনি আমার মেয়েকে বিয়ে করবা। আশেপাশের লোকেরা সবাই সমস্বরে এবারো বলে উঠলো ঠিক ঠিক বিয়ে করা উচিত। আমি তিন লাখ কেন দশ লাখ দিলেও বিয়ে করবোনা, বলতে গিয়েও সবার চোখের দিকে তাকিয়ে ভেতরের কথা ভেতরে রয়ে গেছে। হবু শ্বশুর আব্বা টেনে চেয়ারে বসিয়ে প্রধান বাবুর্চিকে বললেন এই জামাইরে মাংস দিয়া যাও। মাংস দূরে থাক এখন পানিও গলা দিয়ে নামছে না। দাওয়াত খেতে এসে এ কি মুসিবত না পড়লাম। এখন,,,,