সাজেদা সুলতানা কলি
ছেলের বয়স যখন আড়াই বছর তখন আমি দ্বিতীয়বার কনসিভ করি। একমাস যাওয়ার পর থেকে বমির পর বমি। কিচ্ছু খেতে পারি না। পেট ভর্তি ক্ষুধা টেবিল ভর্তি খাবার কিন্তু আমি একদানা খাবারও মুখে নিতে পারছিনা। কী যে অবর্ণনীয় কষ্ট ! দু’পা ছড়িয়ে বসে অঝোরে কান্না করছি। একবার মুখ ফসকে বলেও ফেলেছি এ বাচ্চা রাখবোনা। খাওয়ার মধ্যে খেতে পারছি শুধু ডিম পোচ দিয়ে সাদা ভাত অথবা লাউ শাক ভাজি দিয়ে শুকনো ভাত। এ খাবার কি আর সারাদিন খাওয়া যায় ? তেলে পেঁয়াজের ফোড়ন দিলে নাড়ি ভুঁড়ি উল্টে আসে। মাছের গন্ধ কিছুতেই সহ্য করতে পারছি না। প্রিয় ইলিশ মাছকে তখন শত্রু মনে হচ্ছে। ভেবেছি বাকি জীবনে মনে হয় ইলিশ মাছ আর মুখে নিতে পারবো না। সবজির মধ্যে ফুলকপি কাঁচা অবস্থা দেখলেও গা গুলিয়ে আসে। খাওয়া তো দূরের কথা। একদিন গৃহকর্তাকে বললাম কিছু সবজি আনতে। সেদ্ধ করে খাওয়ার চেষ্টা করব বলে। বারবার করে বলে দিয়েছি ফুলকপি যাতে না আনে।
ঘন্টা পার হয়ে গেছে ক্ষুধায় অস্থির হয়ে পড়েছি। তবুও বাজার থেকে আসে না। আরও খানিক পর কলিং বেল শুনে দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলি। ওমা এ কী ! দুহাতে জাস্ট দুটো ফুলকপি! অন্য কোন সবজি নেই! রাগ চেপে সেই ডিম পোচ দিয়ে ভাত খেলাম। এর মধ্যে একদিন ছেলে অসুস্থ হলো। জ্বর, সর্দি, কাশি এসব। আমি তো নিজেই অসুস্থ। ডাক্তারের কাছে কিভাবে নিবো ? বাচ্চার বাবা আর আমার ভাবী মিলে একজন নামকরা (ভাবির পরিচিত) শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে গেল। বেশ কিছুক্ষণ পর তারা ডাক্তারের কাছ থেকে ফিরে আসে। এরপর যেটা শুনলাম তাতে আমার মনে হল আমার মাথার উপর কোন ছাদ নেই। সব ফাঁকা। আর পায়ের নিচেও কোন মাটি নেই। আমি শূন্যে ভাসছি। শরীরের আগে থেকেই খারাপ ছিল এখন আরো ভেঙ্গে পড়লাম। ডাক্তার বললেন আমার ছেলের অটিজম আছে। তিনি আরেকজন নামকরা চাইল্ড সাইকোলজিস্টের কাছে রেফার করলেন। বাচ্চার আচরণ এবং অন্যান্য সিমটম দেখে তার কাছে মনে হল এই বাচ্চা অটিস্টিক। তারপরও কনফার্ম হওয়ার জন্য সাইকোলজিস্টের সাথে কথা বলতে বললেন। জীবনে এত বই পত্র পত্রিকা পড়েছি অথচ অটিস্টিক বা অটিজম শব্দটা কখনো চোখে পড়লো না। এতেও বেশ অবাক হলাম। তবে চ্যানেল ওয়ানে অল্প স্বল্প গল্প নামে একটা অনুষ্ঠান হতো সেখানে দেখেছি ডক্টর লিডি হক তার ছেলে আদিলকে নিয়ে কিভাবে অটিজমের সাথে লড়াই করেছেন। সেখানে তার গল্প শুনেছি।
অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে ভাবছিলাম আহারে এই মায়ের কত কষ্ট ! কিন্তু ছেলেটা অটিস্টিক এই শব্দটা খেয়াল করিনি। সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয়ই তখন মুচকি হাসছেন। এই যে মেয়ে চিন্তা করো না, এই কষ্টটা তোমার জন্যও বরাদ্দ রেখেছি। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ছেলেকে নিয়ে সাইকোলজিস্টের কাছে গেলাম। তিনি বাচ্চার জন্মের পর থেকে এই আড়াই বছর পর্যন্ত সব আচরণ একে একে জানতে চাইলেন। তখন ফ্ল্যাশব্যাকে সব মনে পড়তে লাগলো। বাচ্চা জন্মের পরপর কান্না করেছিল কিন্তু মাথাটা তুলনামূলক বেশ বড় ছিল জন্মের দুদিন পর জন্ডিস হয়। গর্ভকালীন সময়ে আমার শরীরে প্রচুর পানি থাকার কারণে সময়ের কিছুদিন আগে সিজার করা হয়। যাই হোক জন্মের দু-তিন দিন পর পর্যন্তও দুধ খেতো না। কদিন পর থেকে শুরু হয় সারারাত কান্নাকাটি। ঘুমাতো না। কোলে নিয়ে হাঁটা হাঁটি করি দোল খাওয়াই কিছুতেই কিছু হতো না। অনবরত কান্না করেই যেত। শেষ রাতের দিকে ঘুমাতো তিন মাস বয়স হওয়ার পরও হাত দিয়ে তুলে ধরলে ঘাড়টা এক পাশে হেলে থাকতো। মুখে কোন হাসি ছিল না। বসা, হামাগুড়ি দেওয়া, দাঁত ওঠা, হাটা এগুলো সব সময় মতই হয়েছে। কিন্তু দেড় বছর বয়সেও একটা শব্দও বলতো না। কোন কিছুর দরকার হলে আমার বা তার বাবার হাত ধরে নিয়ে সে জিনিসটার উপর রেখে দিত। মুখে কিছু বলত না। আমি আর ওর বাবা গল্প করছি দেখি ছেলে একা একা বারান্দায় গিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। এই কাজটা প্রায় সময় করত। একা একা বুকটা নিচের দিকে দিয়ে শুয়ে থাকা যে অটিজমের একটা অন্যতম লক্ষণ সেটা তো তখন জানতাম না। এরপর শুরু হলো নতুন লড়াই।
সাইকোলজিস্টের নির্দেশনা মত কাজ করতে থাকলাম। একসময় দুই শব্দ তিন শব্দ করে কথা বলা শুরু করল। ততদিনে আমি যে কনসিভ করেছিলাম সেই বাচ্চাটা সাত মাসের সময় পেটেই মারা যায়। আমার দ্বিতীয়বার সিজার হলো। এ সময় ছেলে আমার ধারে কাছেও আর ঘেঁষে না। সারাদিন বাবার পেছনে পেছনে থাকতো আর কান্নাকাটি করতো। আমি কিছুটা সুস্থ হলে ছেলেকে নিয়ে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়ি। আবার তার শুরু হল রাত জাগা। আড়াইটা তিনটা পর্যন্ত বাচ্চার চোখে ঘুম নেই। তার উপর ভীষণ চেঁচামেচি আর কান্নাকাটি। তার বাবা আর আমি মিলে বাসায় ছোট ছোট জিনিসগুলো দিয়ে দোকান সাজাতাম। রাত জেগে দোকান দোকান খেলে ভোরের দিকে তিনজন ঘুমাতাম। একসময় কান্নাটা থেমেছে। ঘুমের জন্য কখনো ওষুধ খাওয়ায়নি। তবে সামান্য খিচুনি ছিল। তার জন্য দুই বছরেরও কম সময় একটা ওষুধ খাইয়েছি। খিচুনির বিষয়টা তার বাবা খেয়াল করেছেন। খেলতে খেলতে প্রায় সময় কয়েক সেকেন্ডের জন্য কপালটা ফ্লোরে বা দেয়ালে অথবা বিছানায় ঠেকাতো। দিনের মধ্যে ১০-১২ বার এরকম করতো। তার বাবা এটা খেয়াল করে। এই তথ্যটা সাইকোলজিস্টকে দিলে তিনি নিউরোলজিস্ট দেখাতে বলেন। তখনই ডাক্তার বললেন খুব হালকা পরিমাণে খিঁচুনি আছে এটা ওষুধে সেরে যাবে। আল্লাহর রহমতে সেরেও গেছে।
আসলে আজকে আমি যার কথা লিখতে বসেছি তার সাথে আমার পরিচয় ছেলেকে স্পেশাল স্কুলে ভর্তি করাতে এসে। তার আগে স্কুল সম্পর্কে একটু বলি। স্পেশাল স্কুলের দৃশ্য আমাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে। এখানে আসার আগে সমবয়সী বাচ্চাদের সাহচর্য পাওয়ার জন্য ছেলেকে পাড়ার কিন্ডারগার্টেনে ভর্তি করিয়েছিলাম। এক মাসের ব্যবধানে দুটো স্কুল বদলানো হয়ে গেছে কিন্তু কোন লাভ হয়নি। কারণ আমার বাচ্চা তো ক্লাসে বসেই না। পরে স্পেশাল স্কুলের খোঁজ নিয়ে সেখানে ভর্তি করি। এখানে এসে দেখলাম অনেক বড় বড় বাচ্চাগুলো পর্যন্ত জামা কাপড়ে প্রস্রাব পটি করছে। তাদের মায়েরাও হাসছে গল্প করছে আমার বাচ্চা তো আল্লাহর রহমতে এদের চেয়ে অনেক ভালো। তাহলে আমি কেন শুধু শুধু কান্নাকাটি করে শরীর খারাপ করছি। ততদিনে আমি (তৃতীয়বার) আবার কনসিভ করেছি। স্কুল শুরু হবে জানুয়ারি থেকে। তার আগে প্রতিদিন বিকেল বেলায় ছেলেকে একটা মিশনারিজ স্কুলে নিয়ে যেতাম। সেখানে তারা বিশ্বাস করতে চাচ্ছিল না যে আমার ছেলের অটিজম আছে। ডাক্তারি কাগজপত্র দেখে তারপর ভর্তি নিলো। এটা ছিল একটা প্রতিষ্ঠানের অবৈতনিক একটা কার্যক্রম। যেখানে বাচ্চা এবং বাচ্চার মায়েরা কিছুটা সময় কাটাতে পারতো। একটু খেলাধুলা, নাচ গান, মুখে মুখে একটু পড়াশোনা এরকম। সেখানে মায়েরা গল্প করতে করতে প্রসঙ্গক্রমে এক ভাবী (ফারজানা হাসান) আমাকে বলে আপনি তো ছেলের মুখে মা ডাক শুনছেন। আমার তো এমন দুর্ভাগ্য আজ পর্যন্ত মা ডাক শুনিনি। তখন তার মেয়ের বয়স ৭-৮ বছর হবে। তখন পর্যন্ত সে হাঁটাচলা করতে পারতো। কথা বলতে না পারলেও হাসতো, দুহাতে সারাক্ষণ তালি বাজাতো। কিছুদিন পরে স্কুল শুরু হয়। শুরু হয় আমার নতুন যুদ্ধ। ছেলে তো এক সেকেন্ডের জন্য দুই পা একসাথে করে না। মেয়েকে পেটে নিয়ে ছেলের পেছনে পেছনে স্কুলের ছয় তলা বিল্ডিং এর উপর নিচ করতে করতে আমার অবস্থা কাহিল।
মূলত যার কথা লিখতে বসেছি তার লড়াই দেখার পর নিজের এসব কষ্টকে আর কখনও কষ্ট মনে হয়নি।
কিছুদিন পর শুনি ফারজানা ভাবী প্র্যাগন্যান্ট। উনি তো খুশি আমরাও সবাই খুশি হয়েছি। তিন চার মাস পর শুনি উনার জমজ বাচ্চা হবে। তার সাথে একদিন দেখা হলো। জমজ বাচ্চার কথা জিজ্ঞেস করতেই খুশি যেন উপড়ে পড়ছে। যথা সময়ে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে দুটো মেয়ে বাচ্চা হলো। কিন্তু একটা বাচ্চার ঠোঁট ও তালু কাটা। তারপরও উনি খুব খুশি। কারণ এটা আজকাল কোন সমস্যাই না। ফারজানা ভাবী এম আর খানের একটা বই কিনেছিলেন শিশু হাসপাতাল থেকে। বইটাতে বিস্তারিত ছিল কোন বয়সে বাচ্চার কেমন আচরণ হবে। বইয়ের সাথে তার বাচ্চাদের আচরণের কোন মিল নেই। “ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়।” তিনিও ছুটলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার তাকে অভয় দিয়ে বললেন, “আপনি শুধু শুধু ভয় পাচ্ছেন, আপনার মেয়েরা সুস্থ ও স্বাভাবিক আছে, কোন সমস্যা নেই।” একটা কথা আছে না, মা হলো সবচেয়ে বড় ডাক্তার। বাচ্চাগুলোর বয়স যখন ছয় মাস তখন তিনি কনফার্ম হয়ে গেলেন যে তার এই দুইটা বাচ্চার মধ্যেও সমস্যা আছে। আবার গেলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বীকার করলেন যে এ বাচ্চাগুলোও স্বাভাবিক নয়। বড় মেয়েটা তো দশ বছর পর্যন্ত হাঁটাচলা করতে পেরেছে। ছোট দুইটা নিজে থেকে কখনো শোয়া থেকে উঠে বসতেও পারেনি। তাদের তিনজনেরই বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধকতা।
একদিন বিকেল বেলায় কোন একটা কাজে ওনার বাসায় যাই। তখন ছিল শীতকাল। সেবার ঢাকায় ঠান্ডাও পড়েছিল প্রচুর। গিয়ে দেখি বড় মেয়েটা হুইলচেয়ারে বসে দুলছে। (অতিরিক্ত ওজনের কারণে এখন আর হাঁটাচলা করতে পারেনা) মেয়েদেরকে নিয়ে তিনি বড় একটা ম্যাট্রেস পেতে নিচে ঘুমান। ঘুম কি আর যেতে পারেন ? আক্ষেপ করে বলছেন, “একটু ঘুমাতে পারি না, একজন উঠে গেলে তাকে ঘুম পাড়াতে গেলে আরেকজন জেগে উঠে।এভাবে করতে করতে রাত পার হয়ে যায়। কবে যে একটু শান্তিতে ঘুমিয়েছি মনে পড়ে না।” একটু পর দেখি বড় মেয়েটার সাদা পায়জামা পুরো লাল হয়ে আছে। বললাম ভাবি ওর তো পাজামা পাল্টাতে হবে। উনি বললেন, পিরিয়ডের তারিখটা একদম ভুলে গেছি, খেয়ালই করিনি, বলতে বলতে মেয়েকে পরিষ্কার করতে লাগলেন। এর মধ্যে যমজ দুই বাচ্চার একজন প্রস্রাব করে পাজামা ভিজিয়ে ফেলল। তাকে পরিষ্কার করতে না করতে বাকি জনও একই কাজ করলো। আমি বসে নির্বাক হয়ে তাকে দেখছিলাম আর আমার দু’চোখে তখন বন্যা বয়ে যাচ্ছে। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো। আমি না আসলে উনি হয়তো কিছুটা বিশ্রাম পেতেন। এত কষ্টের পরও উনার কখনো গোমড়া মুখ দেখিনি। বললে উনি হাসি মুখে বলেন যে আমার মেয়েদের জন্য আমাকে সুস্থ থাকতে হবে। ভালো থাকতে হবে। আমি যদি মন খারাপ করে রাখি তাদেরকে কিভাবে দেখব। কিভাবে শক্তি পাব।
তবে আশার কথা হল প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কোন একটা অনুষ্ঠানে তিন মেয়েকে নিয়ে ফারজানা ভাবীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে বসার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন। তিনি স্বপ্রণোদিত হয়ে ফারজানা ভাবীকে বললেন, আপনি তিনটা বাচ্চার দেখাশোনা করতে পারছেন আরও তিনটা বাচ্চাও দেখতে পারবেন। আপনি একটা স্কুল খুলেন। আমরা আপনাকে সহযোগিতা করব। অবশেষে তাদের সহযোগিতায় একটা স্কুল খুলেছেন। করোনা মহামারির জন্য একটু পিছিয়ে পড়েছিলেন। এখন নতুন করে আবার শুরু করেছেন। এত কিছুর ফাঁকেও তিনি বিএস এড কোর্স করেছেন এখন এম এস এড করছেন।
কত মানুষ অনেক কিছু পাওয়ার পরও সামান্য অপ্রাপ্তিতে মারামারি, কাটাকাটি, রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় স্বজনের পর্যন্ত মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়। অথচ এই মানুষটার একটাই চাওয়া উনি যাতে সুস্থ থাকেন এবং বাচ্চাদেরকে যত্ন করতে পারেন। তিনি জানেন তার বাচ্চারা কখনো সুস্থ হবেনা। পাঁচ-দশ বছর পরে উনার শরীরে শক্তি থাকবে না বাচ্চাদেরকে দেখাশোনার জন্য। একটাই চাওয়া যাতে সুস্থ থাকেন এবং বাচ্চাদেরকে দেখাশোনা করতে পারেন। বাচ্চাদের মুখে তিনি কখনো মা ডাক শুনবেন না। সেটা আশাও করেন না। মৃত্যুর পর বাচ্চারা একটু দোয়া করবে সেটাও উনি পাবেন না। তারপরও তার সুস্থ থাকার ভাল থাকার আপ্রাণ চেষ্টা শুধু বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য। আমরা এত কিছু পেয়েও সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করতে ভুলে যাই। আর এই মা শুধু তার স্পেশাল বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য বেঁচে আছেন। বেঁচে থাকতে চান।